ট্রেনে যাত্রা করেনি বা করতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ বিরল! কম দূরত্বের রাস্তাই হোক কিংবা হোক বেশি দূরত্বের পথ, ট্রেনে যাত্রা শরীরের জন্য আরামদায়ক হবার সাথে সাথে মধ্যবিত্তের পকেটের আরামদায়ক হওয়ার জন্য সবার খুব পছন্দের। সারাদেশে ছড়িয়ে রয়েছে ট্রেনের জন্য রেলপথ।
সারাবিশ্বে চতুর্থ দীর্ঘতম রেলপথ হলো ভারতের! ভারতের বিভিন্ন ধরনের আবহাওয়ার মধ্যে অবস্থান করছে প্রতিটা রেলপথ। কোথাও বৃষ্টি, কোথাও ভীষণ রোদ, কোথাও আবার তুষারপাত! কিন্তু এত ধরণের আবহাওয়ার মধ্যে অবস্থান করেও রেলপথ অর্থাৎ রেললাইনের কোনো ক্ষতি হয়না। কোনোদিন জং বা মরচে ধরে না। এরপিছনে আছে এক বৈজ্ঞানিক কারণ! আসুন জেনে নিই।
আমরা সবাই জানি যে লোহার ওপর মরচে পরে কিন্তু ইস্পাতের ওপরে কখনোই জং বা মরচে পরে না। লোহা বাতাস ও জলের সংস্পর্শে এলেই মরচে পরে এবং তা ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। এমনকি রেলপথের পাশের লোহার অংশগুলিতে কিন্তু জং ধরে তবে রেললাইনের ওপরে কখনোই নয়। রেলপথগুলি প্রকৃতভাবে তৈরি হয় ইস্পাত দিয়ে। যে সে ইস্পাত নয়, ব্যবহার করা হয় এক বিশেষ ধরণের ইস্পাত যেটি হলো ম্যাঙ্গানিজ ইস্পাত। এই বিশেষ ধরনের ইস্পাতে থাকে ১২% ম্যাঙ্গানিজ ও ০.৮% কার্বন। এবার যেখানে লোহার সাথে জল ও বাতাস মিশে বিক্রিয়ায় ফেরিক ও ফেরাস অক্সাইড তৈরি হয় সেটি এখানে হয় না।
এই বিশেষ ইস্পাত শুধু জং বা মরচেরোধক তাই নয় বরং অনেক বেশি শক্তিশালী ও মজবুতও বটে। রেলপথের ওপরে মরচে পরলে তা দুর্বল ভঙ্গুর হয়ে ভেঙে পরে যেতে পারে এবং মারাত্মক ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়! এই কারণে রেললাইনে এই বিশেষ ধরনের ম্যাঙ্গানিজ ইস্পাত ব্যবহার করা হয়, ফলস্বরূপ রেললাইনে কখনো মরচে পরে না বা জং ধরে না।