প্রত্যেকদিন মাথার উপর আকাশ দিয়ে হেলিকপ্টার এবং উড়োজাহাজ উড়ে যেতে নিশ্চয়ই দেখেছেন। ছোটবেলা থেকে অনেকেরই স্বপ্ন হয় একজন পাইলট বা বিমান চালক হওয়ার। আপনি যদি কখনো না কখনো পাইলট হওয়ার কথা ভেবেছেন, আপনি যদি পাইলট হতে চান এবং আপনি জানতে চান কিভাবে একজন পাইলট বা বিমান চালক হওয়া যায় তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন-
কিভাবে পাইলট হওয়া যায়?(How to become a Pilot?)
অনেকেই আছে যারা জানে না কিভাবে একজন পাইলট হওয়া যায় তাই তারা মনে করে পাইলট হওয়া খুব কঠিন কিন্তু সেরকমটা নয়, আবার খুব সহজও নয়। পাইলট হওয়ার জন্য আপনার কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে এবং আপনাকে একটি কোর্স করতে হবে।
পাইলট হওয়ার ধাপ সমূহ (Steps to becoming a pilot)
পাইলট হওয়ার ধাপগুলি হল-
১) প্রথমত আপনাকে পাইলট হওয়ার জন্য একজন যোগ্য প্রার্থী হতে হবে।
২) এরপর আপনাকে একটি প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।
৩) এরপর আপনাকে মৌখিক ইন্টারভিউয়ে পাশ করতে হবে।
৪) সর্বশেষ শারীরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
পাইলট হওয়ার যোগ্যতা কি লাগে (What qualifications are required to become a pilot?)
একজন ছাত্র বা ছাত্রীর পাইলট হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত যোগ্যতার প্রয়োজন-
১) পাইলট হওয়ার জন্য প্রথমত ছাত্র-ছাত্রীকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করতে হবে।
২) কলা এবং বানিজ্য বিভাগে পড়াশোনা করেও পাইলট হতে পারবেন আপনি। সেক্ষেত্রে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা এবং গণিত নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে।
৩) উচ্চমাধ্যমিকে ৫০% এর বেশি নাম্বার থাকা প্রয়োজন ( পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিতে আলাদা আলাদা ভাবে ৫০% এর উপরে নাম্বার থাকা প্রয়োজন এবং একই সঙ্গে ইংরেজিতে ৫০% নাম্বার থাকা প্রয়োজন)।
৪) এরপর প্রার্থীকে একটি প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে হবে।
৫) একজন পাইলট হতে গেলে অবশ্যই ভালো ইংরেজি বলার দক্ষতা থাকতে হবে।
৬) একজন Commercial পাইলট হওয়ার জন্য, আপনার কাছে একটি Commercial Pilot Licence থাকতে হবে।
৭) পাইলট হওয়ার জন্য আপনার শারীরিক সুস্থতা দেখা হয় তার জন্য একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
৮) ভারতে ১৬ বছর বয়স থেকে পাইলট হওয়ার জন্য ট্রেনিং করানো হয়।
৯) চাকরির ক্ষেত্রে অবশ্যই ১৮ থেকে ৩২ বছর বয়স হওয়া প্রয়োজন।
১০) পাইলট হওয়ার জন্য সবচেয়ে জরুরি উপস্থিত বুদ্ধি একজন পাইলটের উপস্থিত বুদ্ধি থাকা প্রয়োজন।
১১) পাইলট হওয়ার জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনার অবশ্যই ভালো দৃষ্টিশক্তি থাকতে হবে। চশমা ব্যবহারকারীরাও পাইলট হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
পাইলট হওয়ার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা (Entrance test to become a pilot)
আপনি যদি পাইলট হতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে একটি প্রবেশিকা পরীক্ষায় ভালো নাম্বার নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। পরীক্ষাটি ইন্দ্রা গান্ধী রাষ্ট্রীয় উড়ান অ্যাকাডেমি দ্বারা পরিচালিত হয়। এই প্রবেশিকা পরীক্ষাটির নাম হল CPLE। CPLE এর পুরো অর্থ হল Commercial Pilot License Exam । এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর আবেদনকারীকে ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হবে। ট্রেনিং শেষ হবার পর প্রার্থীকে একটি লাইসেন্স দেওয়া হয় যা CPL নামে পরিচিত। CPL এর পুরো অর্থ হল Commercial Pilot Licence বা বাণিজ্যিক পাইলট লাইসেন্স ।
পাইলট প্রশিক্ষণ কোথায় করানো হয় ? (Where is pilot training conducted)
প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর ফ্লাইং স্কুলে যেতে হবে সেখানে পাইলট প্রশিক্ষণ করানো হয়। সেই ফ্লাইং স্কুলে আপনাকে সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং সবকিছু শেখানো হবে।
পাইলট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স সমূহ (Licenses required to become a pilot)
একজন সফল পাইলট হওয়ার জন্য তিন ধরনের লাইসেন্স প্রয়োজন।
১) SPL(Student Pilot License): আপনি যখন ট্রেনিং এর জন্য ফ্লাইং স্কুলে যোগ দেবেন তখন আপনাকে এই সার্টিফিকেট বা লাইসেন্সটি দেওয়া হবে। এটি প্রথম লাইসেন্স বা সার্টিফিকেট যা একজন পাইলটকে দেওয়া হয়। এটি অস্থায়ী সার্টিফিকেট।
২) PPL(Private Pilot license): এরপর আপনাকে যে লাইসেন্সটি দেওয়া হবে তার নাম হলো PPL। এই লাইসেন্সটি আপনি ট্রেনিং করার সময় হাতে পাবেন। ট্রেনিংয়ের ক্ষেত্রে ৬০ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হলেই পড়ুয়া পাবেন এই লাইসেন্সটি।
৩)CPL(Corporate Pilot license): প্রশিক্ষণ শেষ করার পর আপনাকে চূড়ান্ত এই লাইসেন্সটি দেওয়া হবে। দ্বিতীয় লাইসেন্স নিয়ে ২১০ ঘণ্টার ট্রেনিং শেষ করলে পড়ুয়া পাবেন এই চূড়ান্ত লাইসেন্সটি।
একজন পাইলটের প্রতি মাসে বেতন (Salary per month of a pilot)
আপনি যদি একজন পাইলট হতে চান তাহলে একজন পাইলটের বেতন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। একজন পাইলট চাকরি জীবনের শুরুতেই ৫০,০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতা বাড়লে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রতি মাসে বেতন পাবেন।