অনেক সময় আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে অচেনা বেশ কিছু নাম্বার থেকে পার্টটাইম চাকরির অফার করা হয়। +1,+7 দিয়েই শুরু হয় অধিকাংশ ফ্রড নম্বরগুলি। অনেক সময় ফোনের SMS এ এমন পার্টটাইম চাকরির অফার এর মেসেজ আসে, এবং তার সাথে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের লিংক সংযুক্ত থাকে। তবে এই ফাঁদে পড়লেই খোয়াবেন আপনার সর্বস্ব।
বর্তমানে ব্যাংকিং থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ অনলাইনের মাধ্যমে করা হয়। অনলাইনে কাজের পরিমাণ যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে আর্থিক প্রতারণা এবং জালিয়াতি। আজকের এই প্রতিবেদনে এমনই একটি আর্থিক জালিয়াতির ব্যাপারে জানাবো, যেটির সাথে হয়তো আপনারা সকলেই একটু না একটু হলেও পরিচিত রয়েছেন।
এর আগে আমাদের ফোন করে বিভিন্ন বাহানায় ওটিপি চাওয়া হতো এবং ওটিপি বলে দিলেই সেটি ব্যবহার করে আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিত স্ক্যাম্যাররা। তবে বর্তমানে অনেকেই এই স্ক্যাম এর ব্যাপারে জেনে গেছেন এবং অচেনা নম্বর থেকে কল আসলে কেউ তাদের কোন ওটিপি বলতে চান না। এইভাবে স্ক্যামারদের দুর্দিন ঘনিয়ে এসেছিল। এই জন্য তারা শুরু করেছে নতুন বেশ কয়েকটি উপায়, যেগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই গ্রাহকদের প্রতারিত করা যায়।
অনলাইন স্টক ট্রেডিং সংস্থা জেরোধার সহ-প্রতিষ্ঠাতা নীতীন কামাথ জানিয়েছেন যে তার একটি বন্ধু এই স্ক্যামের শিকার। এবং তিনি জানিয়েছেন যে আমাদের সকলকেই সচেতন হতে হবে।
হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে কিভাবে আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়?
প্রথমে whatsapp এ এমন কিছু মেসেজ আসে যেখানে পার্ট টাইম চাকরির অফার দেওয়া হয়। যেমন, শহরের কোন রিসোর্ট বা রেস্তরার রিভিউ দিতে হবে, কোন ইউটিউব ভিডিও লাইক করতে হবে বা কোন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে হবে। আর তাহলেই আপনাকে দেওয়া হবে বেশ মোটা অংকের টাকা। জিরোধার সহ প্রতিষ্ঠাতার বন্ধু একই রকম কাজ করেছিলেন এবং তিনি ৩০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
এরপর ব্যবহারকারীকে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হতে বলা হয়। এখানে ক্রিপটো কারেন্সির মাধ্যমে কয়েন লেনদেন করা হয় এমন ওয়েবসাইটে সাইন আপ করতে বলা হয়। এখানে বেশি রিটার্নের লোভ দেখিয়ে গ্রাহকদের টাকা ইনভেস্ট করতে বলা হয়।
একবার বেশি মূল্যের টাকা জমা করার পর টাকা তুলতে গেলে সেই সংস্থা গুলি থেকে বিভিন্ন রকম বাহানা করা হয়। যেমন বলা হয়, বেশি ট্রেডার লাগবে বা এখন টাকা তোলা যাবে না। জেরোধার সহ প্রতিষ্ঠাতা কামাথের বন্ধুও বড় অঙ্কের টাকা জমা করেছিলেন এখানে। তারপর বেশি ট্রেডার লাগবে শোনার পর আরো পাঁচ লক্ষ টাকা জমা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই টাকা তিনি আর ফেরত পাননি, বরঞ্চ তাকে সেই কোম্পানির থেকে লোন নেবার কথা বলা হয়েছিল।
প্রথমে এই স্ক্যামাররা আপনার ব্যাংক একাউন্টে বেশ মোটা অংকের টাকা পাঠিয়ে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করবে। তারপর আপনাকে বেশি রিটার্নের বিভিন্ন রকম প্রলোভন দেখাবে। ভবিষ্যতে যদি আপনি এদের কোন রকম টাকা পাঠান, তখন থেকেই শুরু হবে এদের প্রতারণা চক্র।
তাই অনলাইনে এমন ভুয়া নম্বর থেকে যদি কোন পার্টটাইম চাকরির মেসেজ আসে তাহলে এখন থেকেই সাবধান হয়ে যান।