পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র ছাত্রীদের কাছে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা হল মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam West Bengal)। রাজ্যের কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী প্রত্যেক বছর এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। মাধ্যমিকের রেজাল্ট এর ভিত্তিতেই ছাত্রছাত্রীরা একাদশে তাদের পছন্দের বিষয় নিয়ে ভর্তি হবার সুযোগ পান।
আর্থিক একমাস পরে ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2023)। পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ও প্রায় শেষের দিকে। তবে প্রত্যেককেই এবার নতুন একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে, খুব ভালো রেজাল্ট করলেও সামান্য একটু ভুলের কারণে আটকে দেওয়া হতে পারে মাধ্যমিকের রেজাল্ট। এই বিষয়ে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবক উভয়কেই সতর্ক হতে হবে।
প্রতিবছর এমন কিছু কন্ট্রোভার্সিয়াল হেডলাইন দিয়ে ফেক খবর সার্কুলেট করা হলেও এই বছরের এই খবরটি মিথ্যা নয়। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা পরিষদের থেকে রীতিমত বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই কেউ যত ভালো নম্বরই পাকনা কেন, বা যত ভালো ইস্কুলেরই ছাত্র হোক না কেন – সামান্য এই ভুলটির কারণে আটকে যেতে পারে তাদের রেজাল্ট।
প্রত্যেক বছর রাজ্যের একাধিক জেলায় টোকাটুকিতে বাধা পেয়ে বা পরীক্ষার শেষে পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুর চালানোর ঘটনার অনেক অভিযোগ সামনে আসে। রীতিমতো এটি একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে যেন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য। কোন বছরই শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে এমন ভাঙচুরের ঘটনায় কোন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। তবে এবার কড়া হাতে এই সমস্যা দমন করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা পর্ষদ।
প্রায় প্রত্যেক বছরেই উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা, মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর ইত্যাদি জেলায় পরীক্ষা কেন্দ্রে টিউবলাইট ,সিলিং ফ্যান ,স্কুলের দরজা-জানলা, দেওয়াল ,বেঞ্চ ইত্যাদি ভাঙচুর করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। অনেক সময় এই ভাঙচুর চলে টোকাটুকিতে বাধা পেয়ে, অনেক সময় ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের খেয়াল খুশি বা আনন্দের জন্যও এমন ভাঙচুর করে থাকেন। ফলস্বরূপ বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হয় স্কুলগুলিকে। অনেক সময় বিশেষ কিছু স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ভাঙচুর করার রেকর্ড থাকায় অন্য স্কুলগুলো তাদের সেন্টারে সেই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার অনুমতি দেন না।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বলা হয়েছে যে, এবার থেকে যদি কোন পরীক্ষার্থীরা মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুর চালায় তবে সেই ছাত্র-ছাত্রীদের দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট স্কুলকেই।
সংশ্লিষ্ট স্কুলকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিজেদের ফান্ড থেকে টাকা দিতে হবে সেই ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলকে। স্কুল চাইলে সরাসরি ছাত্রদের কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করতে পারবে। যদি কোন স্কুলের পক্ষ থেকে এই ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হয়, তবেই মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে সমস্যা হবে।
মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোনোর আগে প্রত্যেকটি পরীক্ষা কেন্দ্রের ক্লিয়ারেন্স লাগবে সেখানে যারা অন্য স্কুলের থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছিল তাদের বিষয়ে। যে সমস্ত স্কুলের ক্লিয়ারেন্স মিলবে না, সেই সমস্ত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমিকের রেজাল্ট আটকে দেওয়া হবে পর্ষদের পক্ষ থেকে। পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে যদি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়া হয় তাহলেই মিলবে মাধ্যমিকের রেজাল্ট।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে রাজ্যের স্কুল গুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা যেন এই বিষয়গুলি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদেরকে সতর্ক করেন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত তে খুশি সাধারণ নাগরিকসহ স্কুল কর্তৃপক্ষগুলিও।