ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরীক্ষা হলেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা(HS Exam)। মাধ্যমিক পরীক্ষার দু’বছর পরে শুরু হয় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা এবং ক্লাস ইলেভেনের পরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পড়াশোনা করার জন্য ছাত্র ছাত্রীরা মাঝখানে এক বছর সময় পান।
একাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনার চাপ বিশেষ একটা থাকে না বললেই চলে। তবে দ্বাদশ শ্রেণীতে ওঠার পর থেকেই ছাত্রছাত্রীদের জীবনে পড়াশোনার চাপটা কঠোরভাবে নেমে আসে। দ্বাদশ শ্রেণীর উচ্চ মাধ্যমিক রেজাল্ট এর ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীরা ভবিষ্যতে হায়ার এডুকেশন(Higher Education) করার সুযোগ পান বিভিন্ন কলেজে।
তবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পড়াশুনার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি উপায়ে উপার্জন করতে পারবেন ছাত্র ছাত্রীরা(Earning Tips For HS Students)। যে টাকা দিয়ে নিজেদের হাত খরচ চালানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে পড়াশোনার খরচও চালিয়ে নেওয়া যাবে নিজের উপার্জনের টাকায়। আজকের এই প্রতিবেদনে উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্র ছাত্রীদের জন্য উপার্জন করার(Earning Tips For Students) আটটি উপায় সম্পর্কে জানানো হলো।
১) ব্লগিং (Blogging):
ছাত্রছাত্রীদের জন্য বাড়িতে বসে উপার্জন করার অন্যতম একটি উপায় হলো ব্লগিং(Blogging Business) করা। বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাটফর্ম এর লেখালেখির মাধ্যমে আপনারা অনেক টাকা উপার্জন (Earning) করতে পারবেন। ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আপনারা প্রত্যেক মাসে অন্তত 200 থেকে 1000 ডলার পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন।
অনলাইনের বিভিন্ন ব্লগ, ওয়েবসাইটগুলিতে বা একজন ফ্রিল্যান্সার ব্লগার(Freelancer Blogger) হিসেবে লেখালেখি করতে পারেন আপনারা। ব্লগিং এর কাজে খুব একটা বেশি সময় লাগবে না। লেখার পাশাপাশি পড়াশোনা করতে কোনো সমস্যাই হবেনা। দিনের মাত্র কয়েক ঘন্টা সময় বের করতে পারলেই ব্লগিং এর লেখা সম্পূর্ন করে ফেলতে পারবেন।
২) টিউশনি (Tutoring Jobs):
এলাকার ছোট ছোট বাচ্চাদের বা মাধ্যমিক স্তর অবধি ছাত্রছাত্রীদের টিউশনি পড়িয়ে অনেক টাকা উপার্জন (Eraning) করতে পারবেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। তাছাড়া কাজটি বাড়িতে বসেই করতে পারবেন বা ছাত্র ছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে বা কোচিং এর মাধ্যমেও করতে পারবেন।
নিজের ক্লাস এর থেকে নীচু ক্লাস এর ছাত্রছাত্রীদের পড়ালে জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে এবং অর্থ উপার্জনের একটা রাস্তাও খুলে যাবে। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা যদি আগের মতই থাকে, বা বাড়ে তাহলে পরবর্তীকালে উপার্জন এর একটা রাস্তা থেকে যাবে এবং উচ্চ শিক্ষার খরচ নিজেই বহন করা যাবে।
বর্তমানে বহু উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীরা নিজের থেকে নিচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের পড়ান। কেউ বাড়িতে, কেউবা ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে পড়ান। এই কাজে আপনারা এখন থেকেই সম্মান অর্জন করতে পারবেন এবং ভবিষ্যতে আপনাদের মূল্যবোধ, দায়বদ্ধতা ইত্যাদি বৃদ্ধি পাবে।
৩) কন্টেন্ট রাইটিং(Content Writing):
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবার পাশাপাশি কনটেন্ট রাইটিং(Content Writing Job) এর মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রীরা বেশ মোটা অঙ্কের উপার্জন করতে পারবেন।
কনটেন্ট রাইটিং এ বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লেখালিখির কাজ করতে হয়। এখানে সাম্প্রতিক কোনো ঘটনা, চাকরির বিজ্ঞপ্তি, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপনারা লিখতে পারেন। এর জন্য আপনাকে ভাষা এবং ব্যাকরণ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
প্রতিমাসে প্রায় ৮-১০,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন এই কাজে । ব্লগিং এর মত কন্টেন্ট রাইটিং(Content Writing) এর কাজেও খুব একটা বেশি সময় লাগবে না। পড়াশোনার (Study) পাশাপাশি মাত্র কয়েক ঘন্টা সময় বের করতে পারলেই কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ অনায়াসেই করতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা।
৪) ভিডিও এডিটিং (Video Editing):
বড়ো বড়ো সোশ্যাল মিডিয়া পেজ, ওয়েবসাইট, এবং ইউটিউবারদের ভিডিও এডিট করে দেওয়ার জন্য তারা ভালো এডিটর খোঁজ করে থাকেন। যদি আপনাদের ভিডিও এডিটিং স্কিল (Skilled) ভালো হয়ে থাকে, তাহলে আপনারা খুব স্বাচ্ছন্দের সাথে এই কাজটি করতে পারবেন। স্কিল ভালো থাকলে ভিডিও এডিটিং করতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না। আপনারা পড়াশোনার পাশাপাশি এই কাজটি করে প্রত্যেক মাসে অনেক টাকা উপার্জন (Earn Money) করতে পারবেন।
৫) ফুড ডেলিভারি (Food Delivery):
কাছে বাইক বা সাইকেল থাকলে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উপার্জন করার অন্যতম একটি রাস্তা হলো খাবার ডেলিভারি করা। বর্তমানে Zomato, Swiggy সহ আরো বহু সংস্থা রয়েছে, যেখানে ফুড ডেলিভারি করার মাধ্যমে বহু যুবক-যুবতীরা প্রত্যেক মাসে বেশ মোটা অংকের টাকা উপার্জন করে থাকেন। পড়াশোনার পাশাপাশি এই কাজটি আপনারা স্বাচ্ছন্দেই করতে পারবেন। সারাদিন পড়াশোনা করে রাতের দিকে পার্টটাইম হিসেবেও কাজটি করতে পারবেন। মাস গেলে যা টাকা উপার্জন হবে , তাই দিয়ে পড়াশোনার খরচ চলে যাবে এবং হাতখরচও থাকবে বেশ অনেক টাকা।
৬) Web Designing:
বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি,ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলি বিভিন্ন পেজ, ওয়েবসাইট এবং ব্যানার এর জন্য লোগো ,থাম্বনেইল ইত্যাদি তৈরি করার মাধ্যমে উপার্জন করার সুযোগ রয়েছে ছাত্র ছাত্রীদের।
Web designing হল ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজ তৈরির একটি পদ্ধতি যেখানে উপযুক্ত ডিজাইন এবং বিন্যাস সম্পন্ন করে ওয়েবসাইট এর আকর্ষণীয়তা ও ব্যবহারকারীর প্রয়োজনীয়তা মেটানো হয়। ওয়েব ডিজাইন করতে পারেন একজন ওয়েব ডিজাইনার বা ওয়েব ডেভেলপার।
প্রতি কাজ পিছু কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন।
৭) ডাটা এন্ট্রি অপারেটর (Data Entry Jobs):
বিভিন্ন কোম্পানি, অফিস এবং এলাকার কোন বড় রেস্টুরেন্ট বা হোটেলের হিসাব নিকাশ, কারা আসছেন বা যাচ্ছেন তাদের হিসাব রাখা এমন বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করা হয়। বেশিরভাগ কাজগুলি অফলাইনে করা হয় এবং সেগুলি পরবর্তীকালে কম্পিউটারে (Computer) লিপিবদ্ধ করা হয়।
ছাত্র-ছাত্রীরা খুব অল্প সময় কাজ করে এই কাজটি করতে পারবেন। বেসিক কম্পিউটার স্কিল (Basic Computer Skill) জানা থাকলে এই কাজটি অনায়াসেই করে ফেলতে পারবেন।
৮) টেলি কলার (Tele Caller):
বিভিন্ন কোম্পানিগুলি গ্রাহকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য, প্রমোশনের জন্য টেলি করার নিয়োগ করে থাকে। অনলাইনে বিভিন্ন জব সার্চিং ওয়েবসাইটে (Website) আপনাদের বায়োডাটা আপলোড (Biodata) করে রাখলে এমন বহু কাজের অফার আপনারা পেয়ে যাবেন ।এই কাজটি(Work) আপনারা বাড়িতে বসেই করতে পারেন, তাছাড়া অফিসে গিয়েও করতে পারেন। ছাত্র-ছাত্রীরা অনায়াসে এই কাজটি পড়াশোনার মাঝে করতে পারবেন।
মূলত গ্রাহকদের বিভিন্ন রকম অভিযোগ শোনা, তাদের সমস্যা সমাধান করা, তাদেরকে বিভিন্ন অফার সম্পর্কে জানানো ইত্যাদি কাজ করতে হয় টেরি কলার হিসেবে।