ছেলেমেয়েদের বয়স মোটামুটি ১৩-১৪ বছর হবার সময় থেকে তাদের আলাদা করে হাত খরচের দরকার পড়ে। পাশাপাশি পড়াশোনার খরচ, টিউশন খরচ, স্কুল এবং অন্যান্য জায়গায় যাতায়াতের খরচ তো আছেই। অনেক ছেলে মেয়েরাই এই সমস্ত খরচের জন্য পরিবারের উপর নির্ভরশীল থাকতে চান না এবং নিজে কোন একটি কাজের মাধ্যমে উপার্জনের চেষ্টা করে থাকেন।
মূলত কলেজ(College) লাইফের থেকেই ছেলেমেয়েদের খরচের পরিমাণ বেশ অনেকটাই বেড়ে যায়। কলেজের বেতন, পড়াশোনার খরচ সহ আরো অনেক কাজে অর্থের দরকার পড়ে। এইজন্য এই সময়টাতে কোন একটি কাজের মাধ্যমে টাকা উপার্জন(Earning) করা অনেকের অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে।
আজকের এই প্রতিবেদনে আলোচনা করা হবে এমন ৯টি কাজ সম্পর্কে, যেগুলি ১৮ থেকে ২৫ বছরের ছেলে মেয়েরা করতে পারবেন। এই কাজগুলি আপনারা পড়াশোনার মধ্য থেকেও করতে পারবেন। এবং পড়াশোনার কোনো ক্ষতি না করেই আপনারা উপার্জনের রাস্তা খুঁজে পাবেন।
১) মেহেন্দি আর্টিস্ট:
এখনকার দিনের বিয়েসহ অন্যান্য অনেক শুভ অনুষ্ঠানে মেহেন্দি করার প্রচলন হয়েছে। তাছাড়া বিয়ে বাড়িতে একসাথে অনেকের মেহেন্দি করার প্রয়োজন হয়। ভালো মেহেন্দি করার জন্য প্রয়োজন হয় একজন ভালো মেহেন্দি আর্টিস্টের(Mehendi Artist)।
আপনারা যদি মেহেন্দির কাজ শিখে একজন ভালো মেহেন্দি আর্টিস্ট(Artist) হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে বিয়ে এবং অন্যান্য উৎসবের মরশুমে অনেক কাজের অফার পাবেন। প্রতিটি মেহেন্দি পিছু আপনারা কয়েকশ টাকা পর্যন্ত উপার্জন(Earning) করতে পারবেন। তাছাড়া একসাথে একাধিক অর্ডার এলে সেখানে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে ফেলতে পারবেন একদিনেই।
২) জিম ট্রেনার:
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা প্রায়শই জিমে যাতায়াত করেন। তবে শুধুমাত্র জিমে(Gym) গিয়ে ব্যায়াম এবং শরীরচর্চা করলেই শরীর ফিট এবং সুস্থ থাকে না। একটি নির্দিষ্ট গাইডেন্স মেরে জিম জয়েন করতে হয়।
আপনি যদি একজন জিম ট্রেনার হিসেবে কাজ করতে পারেন তবে এলাকার কোন জিম সেন্টারে(Gym Centre) খুব সহজেই কাজের সুযোগ পাবেন। মূলত সকাল এবং সন্ধ্যের দিকে জিমে যাতায়াত করেন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা। তাই পড়াশোনার কোনো রকম ক্ষতি না করেই আপনারা অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দের সাথে এই কাজটি করতে পারবেন।
৩) ব্রাইডাল আর্টিস্ট:
মেহেন্দি আর্টিস্ট এর মত ব্রাইডাল আর্টিস্ট(Bridal Artist) এখনকার দিনে অন্যতম একটি লাভজনক পেশা। বিয়েতে কনেকে সাজাতে বেশ মোটা অংকের অর্থ দেওয়া হয়। ব্রাইডাল মেকআপ করা শিখে নিয়ে আপনি যদি একজন ব্রাইডাল মেকাপ আর্টিস্ট হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে অনেক বিয়ের অনুষ্ঠানে আপনি কাজের অফার পেতে পারেন।
তবে এই কাজে প্রাথমিক কিছু মূলধনের প্রয়োজন আছে। কারণ বিভিন্ন রকম সাজ সামগ্রী আপনাকেই কিনতে হবে। তবে প্রতিটি কাজ পিছু আপনারা কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন এবং বিয়ের মরশুমে একসাথে অনেক কাজ পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মাসে ৫০ হাজার টাকারও বেশি উপার্জন(Earning) সম্ভব।
৪) ভিডিও এডিটির:
একজন ভিডিও(Video) এডিটর হিসেবে কাজ করেও আপনি প্রতিমাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। বিভিন্ন কোম্পানি, সোশ্যাল মিডিয়ার ইনফ্লুয়েন্সরগণ এবং বিভিন্ন মাধ্যমের প্রমোশনের জন্য ভালো ভিডিওর দরকার পড়ে। সেজন্য প্রথমেই দরকার একজন ভালো ভিডিও এডিটরের।
ভিডিও এডিটিং(Video Editing) কোর্স ভালো করে শিখে নিতে পারলে আপনার কাজের অভাব হবে না। বড় বড় পেশাগত কাজ ছাড়াও আপনারা যদি ছোটখাটো ভিডিও(Video) এডিটিং এর মাধ্যমেও টাকা উপার্জন করতে চান তারও সুযোগ রয়েছে বর্তমানে।
ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) প্ল্যাটফর্মে ভিডিও এডিটিং গ্রুপ গুলিতে আপনারা প্রতিদিন একাধিক কাজের অফার পাবেন। মাত্র কয়েক মিনিটের কাজের জন্যই আপনি কয়েকশো টাকা থেকে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন।
৫) সোস্যাল মিডিয়া ম্যানেজার:
বড় বড় সংস্থা কোম্পানি বা সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) ইনফ্লুয়েন্সারদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট হ্যান্ডেল করার জন্য প্রয়োজন পড়ে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের।
সংস্থা বা বড় বড় ইনফ্লুয়েন্সারদের(Social Media Influencer) সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা, তাদের পোস্টে বিভিন্ন কমেন্টের উত্তর দেওয়া, মেসেজের রিপ্লাই দেওয়া ইত্যাদি কাজ গুলি মূলত সোশ্যাল মিডিয়াম ম্যানেজার হিসেবে করতে হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট(Social Media Management) এর কাজটি যদি আপনি একবার শিখে নিতে পারেন, তাহলে আপনি বাড়ি বসেই বিভিন্ন কোম্পানি এবং বিভিন্ন ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল করার মাধ্যমে অনেক টাকা উপার্জন(Earning) করতে পারবেন।
৬) অফলাইন টিউটর:
আপনি যদি পড়াশোনায় ভালো হন, তাহলে অফলাইন টিউশনি পড়িয়েও প্রতিমাস অনেক টাকা উপার্জন(Earning) করতে পারবেন। আপনি যে বিষয়টি পড়াতে চান সেই বিষয়টি সম্পর্কে আপনার গভীর জ্ঞান থাকতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধামতো সময়ে এবং নির্দিষ্ট একটি বেতনের বিনিময়ে আপনি অফলাইন কোচিং শুরু করতে পারেন।
এখানে আপনার প্রাথমিক মূলধন বলতে কোন কিছুরই প্রয়োজন পড়বে না। তবে প্রতি মাসের শেষে আপনি বেতনের পাশাপাশি আলাদা করে সম্মান অর্জন করতে পারবেন।
৭) কন্টেন্ট রাইটার:
একজন কন্টেন্ট রাইটার(Content Writer) হিসেবে কাজ করে আপনি প্রতিমাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এই কাজে আপনার খুব বেশি একটা সময় খরচ হবে না। দিনের অবসর সময় আপনি লেখালেখি করার মাধ্যমে প্রত্যেক মাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। বিভিন্ন রকম সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) প্লাটফর্মে বা কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইটে লেখালেখির মাধ্যমে অনেক টাকা উপার্জন(Earning) করা যায়।
পাশাপাশি কোন একটি বিষয় নিয়ে রিসার্চ করে লেখার পর সেই লেখাটি আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রিও করতে পারবেন। এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে ইন্টারনেটে(Internet)। তবে অবশ্যই আপনাকে সেই ওয়েবসাইটগুলি ভেরিফাই করে তারপরেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
৮) ওয়েব ডিজাইনার:
ওয়েব ডিজাইনিং কোর্স(Web Designing Course) শিখে নিয়ে আপনি একজন ভালো ওয়েব ডিজাইনার হয়ে উঠতে পারলে বিভিন্ন রকম সংস্থা, কোম্পানী বা কোন প্রতিষ্ঠানের লোগো বা অন্যান্য ডিজাইন করার মাধ্যমে প্রতি মাসে অনেক টাকা উপার্জন(Earning) করতে পারবেন।
৯) ইউটিউবার:
বর্তমানে যুবক ছেলেমেয়েদের জন্য অন্যতম একটি আয়ের পথ হল ইউটিউব। এখানে আপনাকে ভালো মানের ভিডিও(Video) তৈরি করতে হবে এবং ভিডিওতে আসা ভিউ ও সাবস্ক্রাইবার(YouTube Subscribers) এর ভিত্তিতে আপনি প্রতিমাসে ইউটিউব থেকে টাকা পাবেন।
বর্তমানে এমন বহু ছেলে মেয়েরা রয়েছেন যারা ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করে চলেছেন। তবে Youtube এ ভিডিও বানানোর সময় মাথায় রাখতে হবে যে, হঠাৎ করেই আপনি টাকা পাবেন না। তার জন্য অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে এবং নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে।