বাঙালি মতে, সরস্বতী পুজোয় (Saraswati Puja) একটি শিশুর হাতেখড়ি হয় স্লেট-চক হাতে। যেই না হাতেখড়ি হয়, অমনি কাঁধে বইয়ের বোঝা চেপে বসে। এরপর থেকেই অভিভাবকেরা সন্তানের জন্য ভাল স্কুল খুঁজতে শুরু করেন। তবে প্রথমে ‘কিন্ডারগার্টেন’ বা ‘প্লে স্কুল’ (Kindergarten or Play School) দিয়েই নিয়মিত বাড়ির বাইরে থাকার অভ্যাস (Practice) করাতে হয় শিশুদের।
শুরুর দিকে সব বাচ্চাকেই কাঁদতে দেখা যাক বেশ কিছুক্ষণ মা-বাবাকে দেখতে না পেয়ে। তবে ধীরে ধীরে তা অভ্যাসে পরিণত হয়। বাড়ির বাইরে স্কুলই তখন হয়ে ওঠে বাচ্চাদের কাছে বেশি প্রিয়। মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, কাছের মানুষদের ছেড়ে এই নতুন পরিবেশে শিশুরা যাতে মানিয়ে চলতে পারে, তাই স্কুলে যাওয়ার আগেই তার পাঠ দিতে হবে শিশুকে।
অন্য শিশুদের সঙ্গে মানিয়ে চলতে গেলে কোন কোন জিনিস শেখাবেন শিশুকে?
১) কখনো কারো গায়ে হাত না তোলা(Never Bit Anyone):
প্রত্যেক মানুষের উচিত অন্য মানুষটিকে সম্মান করা। এই সম্মান করার বিষয়টি শিশুকে প্রথম থেকেই শেখান। কখনো কারো গায়ে খেলার ছলে বা মজার ছলেও হাত দেওয়া উচিত না এমনকি বন্ধু কোনো বিষয় না চাইলে তাকে সেই বিষয়ে জোরাজুরি (Nagging) করা যাবে না এটিও বোঝাতে হবে বাচ্চাকে।
২) ভাগ করে নেওয়া(Sharing is Caring):
চকোলেট হোক বা পড়ার বই, সকলের সাথে ভাগ করে নিতে হয় আর ভাগ করে বেশি আনন্দ পাওয়া যায় এই শিক্ষা শিশুকে দেওয়া খুব প্রয়োজন। স্কুলে গিয়ে বন্ধুর সাথে ভাগ করে সব জিনিস উপভোগ করতে হয় তাও শেখানো প্রয়োজন। পাশাপাশি নিজের আবেগ, অনুভূতি, চাহিদাও প্রকাশ করতে শেখান শিশুকে।
৩) শ্রদ্ধা করা(Respect Everyone):
মা-বাবা বা পরিবারের অন্য সকলের মতো স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও যে শ্রদ্ধা করতে হবে, সেই বিষয়টি শেখান ছোট থেকেই। এমন কোনও কথা যা সম্মানজনক বা রুচিসম্মত নয় তা সন্তানের সামনে বলবেন না। বাচ্চারা কিন্তু তোতাপাখি(Children are Like Parrots)। যা শুনবে তাই শিখবে সুতরাং এই ধরনের কথাবার্তাও ব্যবহার করা থেকে নিজেরা বিরত থাকুন।
৪) চটপট শিখে নেওয়া(Quick learning):
সব বাচ্চার শেখার ক্ষমতা এক হয়না। এই সকল ক্ষেত্রে তাই বেশি উপকার করে মন থেকে কোনো বিষয় শেখা। মুখস্থ বিদ্যা শেখাবেন না বাচ্চাকে। স্কুলে গিয়ে অন্য বন্ধুদের মতো চটপট করে সব বিষয় অনুধাবন করতে না পারলে অনেক সময়ে শিশুর মনে হীনম্মন্যতা (Inferiority) দেখা দিতে পারে। তাই স্কুলে যাওয়ার আগে থেকেই শুধু মুখস্থ না করে যে কোনও বিষয়কে মন দিয়ে বুঝতে বা আত্মস্থ করতে শেখান।
৫) দায়িত্ব নিতে শেখা(বে Responsible):
বাড়ি থেকেই সন্তানকে ছোট ছোট দায়িত্ব (Responsibility) নেওয়া বিশেষ করে নিজের কাজ নিজে করা শেখান। নিজে হাতে খাবার খাওয়া, নিজের জিনিস গুছিয়ে রাখা, মল-মূত্র ত্যাগ করার পর পরিষ্কার করার মতো কাজ যেন সে কারও সাহায্য ছাড়াই করতে পারে, তা বাড়ি থেকেই অভ্যাস করান।
৬) খাবার খাওয়ার আগে এবং খাওয়ার পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস(Wash your Hands Before and After Meal):
খাবার খাওয়ার আগে এবং খাবার খাওয়ার পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস করান বাচ্চাকে বাড়ি থেকেই। এভাবে স্কুলে গিয়েও বাচ্চা সেই জিনিসটি করবে অভ্যাস থেকেই। বাচ্চাকে সুস্থ রাখার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ (Important) বিষয়।
-Written by Riya Ghosh