মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সরকারি কর্মচারীদের সাথে সরকারের বিরোধ চলছে বহুদিন ধরেই। বিভিন্ন জায়গায় গণ-আন্দোলনের পাশাপাশি এই অভিযোগ হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court DA Case) গেছে। এখনো পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীরা বকেয়া মহার্ঘ ভাতা পাননি। এরই মধ্যে রাজ্য সরকার গত 1 মার্চ থেকে নতুন হারে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করেছে, তা সত্ত্বেও বকেয়া DA এবং মহার্ঘ ভাতা বাড়ানোর জন্য আবেদন করে চলেছেন চাকরির প্রার্থীরা এবং বিরোধী দলগুলি।
ধর্মতলায় ধরনা মঞ্চে মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত আন্দোলন করছেন বহু প্রার্থীরা। এদিন আন্দোলনকারীদের সাথে দেখা করতে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির বহু দলীয় বিধায়ক। ISF দলনেতা নওশাদ সিদ্দিকীও ধর্মতলায় ধরনামঞ্চে দেখা করতে যান আন্দোলনকারীদের সাথে। আন্দোলনকারীদের সাথে একই মঞ্চে ছিলেন কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিএমের বহু নেতারা। বিরোধী দলগুলোর চাপে মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত ইস্যুতে চাপে রয়েছে সরকার। আর এই চাপ সামলাতেই মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, DA নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। DA নিয়ে কটাক্ষ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘোষণা হয়েছিল ডিএ কিন্তু প্রস্তাব হয়নি। 5Th Pay Commission যে মহার্ঘ ভাতা বকেয়া রেখেছিল তাও দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।
বিধানসভায় মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ খোলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, কেন্দ্র সরকারের তুলনায় রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের বেশি ছুটি দেওয়া হয়। দুই সরকারের কর্মচারীদের বেতন কাঠামোরও তফাৎ আছে। মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত ইস্যুতে গতবারের বেতন কমিশন (Pay Commission) এবং চলতি বেতন কমিশন মিলিয়ে মোট মহার্ঘভাতার হিসাবও দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”৯৯ শতাংশ ও ৬ শতাংশ মিলিয়ে রাজ্যে ১০৫ শতাংশ ডিএ দেওয়া হচ্ছে।আর কত চাই, কত হলে সন্তুষ্ট হবেন? আমায় পছন্দ না হলে আমার মুণ্ড কেটে নিন। এর থেকে বেশি আমার থেকে পাবেন না।”
মহার্ঘ ভাতার পাশাপাশি পেনশন (WB Pension Scheme) নিয়েও মমতা ব্যানার্জি পাল্টা প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, “পেনশন না দিলে আমাদের ২০ হাজার কোটি টাকা বেঁচে যায়। পেনশন বন্ধ করে দেব? ১ লক্ষ ৭৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। টাকা তো আকাশ থেকে পড়বে না।”
মহার্ঘ ভাতা নিয়ে যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে আগামী ১০ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। ঐদিন যাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত না হয়, সেই দিকে নজর রেখেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি উপযুক্ত কারণ ছাড়া যদি কোন ব্যক্তি ঐদিন কামাই করেন, তাহলে তার বেতন কেটে নেওয়া হবে বা উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে নবান্ন তরফ থেকে।