আরো একবার চাকরি বাতিলের ঘোষণা করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দেয়া হল অবিলম্বে ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর সুপারিশ প্রত্যাহার করে নিতে হবে। বেআইনিভাবে এই সমস্ত প্রার্থীদের কে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বলে জানানো হয়।
হাইকোর্টের পক্ষ থেকে আরও নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, যে সমস্ত প্রার্থীদের সুপারিশপত্র বাতিল করা হবে তারা অন্য আর কোন চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, বেআইনি ভাবে দুর্নীতি করে এই সব প্রার্থীদের সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল।’’
১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী আদালতের স্বীকার করে নেন যে, গ্রুপ ডি প্রার্থী হিসেবে ১৯১১ জনকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। সে সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে কে নিযুক্ত ছিলেন তার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। স্কুল সার্ভিস কমিশনার আইনজীবী জানান যে সে সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন সুবিরেশ ভট্টাচার্য। স্কুল সার্ভিস কমিশন সমস্ত তথ্য যাচাই করে আদালতের স্বীকার করে যে, ঐ সমস্ত প্রার্থীর ওএমআর শিট কারচুপি করে চাকরির সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল।
হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেওয়ার পরেই অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই 1911 জন চাকরি প্রার্থীদের সুপারিশ বাতিল করল স্কুল সার্ভিস কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেই সমস্ত প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করার।
নির্দেশ দেবার পরেই তখনকার চেয়ারম্যান সুবিরেশ ভট্টাচার্যকে এই মামলার সাথে যুক্ত করার কথা বলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এছাড়া যে সমস্ত প্রার্থীরা বেআইনিভাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন, তাদেরকে প্রয়োজনে সিবিআই হেফাজতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীকে বলেন, ‘‘আপনারাই যখন বলছেন ২,৮১৯ জনের ওএমআর শিটে কারচুপির বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, তা হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আপনাদেরই করতে হবে। প্রথমে আলাদা ভাবে এই প্রার্থীদের নাম কমিশনের সাইটে আবারও প্রকাশ করুন। তার পর তাঁদের নিয়োগ বাতিল করুন।’’
এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রুপ ডি তে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির তদন্তে নামে সিবিআই। সিবিআই এর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার ১৬৯৮ জন গ্রুপ ডি কর্মীর তালিকা প্রকাশ করে শিক্ষা দপ্তর। যাদের ওপর নিয়োগের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, তাদের প্রত্যেকের নাম প্রকাশ করা হয়। যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ আছে, তাঁরা যদি নিজেদের নির্দোষ প্রমাণিত না করতে পারেন, তবে তাদের জেল হবে বলেও জানিয়ে দেন বিচারপতি বসু।