প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়ির পরেই তাদের দ্বিতীয় ঘর হল তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুলে ভর্তি হবার পর একজন পড়ুয়া বাড়িতে যতটা সময় কাটায় তার অনেকটাই অংশ কাটায় তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এই স্থানগুলিতে আপনার সন্তান আপনার চোখের আড়ালে থাকে। তাই স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় জায়গাগুলি আপনার সন্তানের জন্য সুরক্ষিত হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা হোস্টেল-মেসে থাকা সন্তানের সাথে অভিভাবকদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। তাই এই স্থানগুলির সুরক্ষা নিশ্চিন্ত করা অভিভাবক হিসেবে আপনার প্রধান দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
সম্প্রতি যাদবপুর ইউনিভার্সিটির(Jadavpur University) স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডুর(Swapnadip Kundu) খবর আশা করি সকলেই জানেন। আর কোন বাবা মা যাতে সন্তানহারা না হন, তার জন্য অবশ্যই উচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপনার সন্তানের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। সন্তানকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা যে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর আগে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
১. প্রতিষ্ঠানের খ্যাতি দেখে ছুটবেন না:
অনেক সময় বাবা মায়েরা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খ্যাতি, নাম, জশ দেখে কোনরকম চিন্তা ছাড়াই সন্তানকে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দেন। অনেক বাবা মায়েরাই এই ভুলটি করে থাকেন। মূলত নিজেদের এবং সন্তানের স্ট্যাটাস বাড়াতে তারা এই ভুলটি করে থাকেন।
২. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খোঁজ নিন:
সন্তানকে যে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর আগে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে খোঁজ নিন। তাদের রেকর্ড হিস্ট্রি(Record History) যাচাই করুন। প্রতিষ্ঠানটি ভালো নাকি খারাপ, তার খুঁটিনাটি সমস্ত তথ্য আগেভাগেই যাচাই করে নিন।
৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা খুঁটিয়ে দেখুন:
সন্তানকে যে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর আগে দেখে নিন সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা কতটা মজবুত। কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জেনে নিন সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোন সিসিটিভি ক্যামেরা আছে কিনা। সিসিটিভি ক্যামেরা(CCTV Camera) থাকলে যে কোন স্থানে অপরাধের মাত্রা অনেকটাই কম থাকে, বা হয় না বললেই চলে। ছাত্র-ছাত্রীরা যেখানে জমায়েত করেন, সেই স্থানগুলি সুরক্ষিত কিনা তা অবশ্যই যাচাই করে নিন।
৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সন্তানের অভিযোগ শুনুন:
একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেমন, তা সম্পর্কে জানতে গেলে বাবা-মায়ের থেকেও পড়ুয়ারা বেশি বলতে পারবে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ সময় কাটায়, সেজন্য তাদের থেকে ভালো কেউ বলতে পারবে না সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর সম্পর্কে। প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত সন্তানের কাছ থেকে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অভিযোগগুলি সম্পর্কে শোনা। সন্তান সেখানে মানিয়ে নিতে পারছে কিনা, তার কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কে সন্তানকে জিজ্ঞেস করতে হবে। যদি সন্তানের কোনোরকম অভিযোগ থাকে, তাহলে সেগুলি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কারো সাথে আলোচনা করতে হবে এবং সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।
৫. শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের সম্পর্কে যাচাই করুন:
বাবা-মায়ের পরে শিক্ষক-শিক্ষিকারাই সন্তানদের প্রধান অভিভাবক। শিক্ষক ও পড়ুয়াদের মানসিক মেলবন্ধন অত্যন্ত প্রয়োজন। একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকার আচরণ সন্তানের আচরণকে প্রভাবিত করে। এইজন্য সন্তানকে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর আগে সেই প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষক শিক্ষিকাদের সম্পর্ক যাচাই করুন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকারা শিক্ষার্থীদের সাথে কতটা সাবলীল এবং বন্ধুত্ব মনোভাবাপন্ন এই বিষয়টি অবশ্যই যাচাই করুন।