HomeBusiness ideasগ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য অর্থ উপার্জনের সেরা ৬টি উপায়। হবে মোটা টাকার মুনাফা,...

গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য অর্থ উপার্জনের সেরা ৬টি উপায়। হবে মোটা টাকার মুনাফা, জানুন বিস্তারিত।

বর্তমান যুগের সাথে তালে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে সকলের প্রয়োজন উপার্জনের(Earning)। কিন্তু বর্তমানে চাকরির বাজার কমে এসেছে তাই সকলেই ঝুঁকেছে অন্য উপায়ে উপার্জনের উপায় খুঁজতে। আর সেসব দিকে পিছিয়ে নেই গ্রামের ছেলেমেয়েরাও। তবে এখনো যাঁরা উপার্জনের উপায় সম্পর্কে জানেন না তাঁদের দিশা দেখাতেই আজকের এই প্রতিবেদন। ভালো করে জেনে রাখুন উপায়গুলি। (6 Best Ways to Earn Money for Villagers)

আজকে যে উপায়গুলির কথা বলতে চলেছি সেগুলো মোটামুটি অনেকেই জানেন। কিন্তু এই উপায়ে যে ভীষণ ভালো উপার্জন করা যেতে পারে সেই বিষয়ে সবার জ্ঞান নেই।

নিচে সমস্ত উপায়গুলির সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হলো:

i) কোচিং সেন্টার(Coaching Center):
আপনি কি পড়াতে ভালোবাসেন? পড়ানোর ক্ষেত্রে দক্ষতা আছে? তাহলে এই উপায়টি আপনার জন্য আদর্শ। বিভিন্ন ক্লাসের বাচ্চাদের নিয়ে নির্দিষ্ট একটি অর্থের বিনিময়ে পড়িয়ে করতে পারেন প্রচুর পরিমাণে উপার্জন(Earning)। কিভাবে করবেন এইভাবে উপার্জন?

১) সবার আগে একটি বড় ঘর ভাড়া করুন বা নিজের বাড়ির বড়ো ঘরটিকেও কাজে লাগাতে পারেন।
২) এবার কিছু বাচ্চা যারা আপনার কাছে পড়তে চায়, ডেকে আনুন নিজের পড়ানোর ঘরে।
৩) নিজের নামে বিজ্ঞাপন (Advertisement) তৈরি করে তা ছড়িয়ে দিতে পারেন বিভিন্ন জায়গাতে।

এভাবেই ধীরে ধীরে আপনার প্রচার হবে এবং বাড়বে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা। মাসের শেষে পাবেন প্রচুর টাকা মুনাফা।

ii) বিউটি পার্লার(Beauty Parlour):
শহরের মধ্যে তো বিউটি পার্লার (Beauty Parlour) অলিতে গলিতে চোখে পরে। তবে গ্রামের মধ্যে এই সংখ্যা কম চোখে পরে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে খুলে ফেলতে পারেন বিউটি পার্লার। বিভিন্ন ভাবে চুল কাটা থেকে শুরু করে কনে সাজানো অবধি, সবকিছুই করতে পারেন পার্লারে।

তবে হ্যাঁ, পার্লার খোলার আগে আপনাকে এইসব শিখতে হবে বিউটিশিয়ান কোর্সের (Beautician Course) মাধ্যমে। অনেকেই এই কোর্স করান কিছু অর্থের বিনিময়ে। সেখানে ভর্তি হয়ে প্রথমে সমস্ত কিছু শিখে দক্ষ হবার পরে, খুলে ফেলুন আপনার নিজস্ব বিউটি পার্লার(Beauty Parlour)।

গ্রামের মধ্যে বিউটি পার্লার কিন্তু ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং আপনি আপনার কাজের মাধ্যমে সকলের মন জয় করলে তো কথাই নেই।

iii) মুদিখানার দোকান(Grocery Store):
মানুষ খাবার ছাড়া বাঁচেনা আর খাবার তৈরি করতে গেলে তো তেল, নুন, চিনি লাগবেই। প্রতিদিনের এই দরকারি জিনিসগুলি পাবেন কোথায় সাধারণ মানুষ? কোথায় আবার! মুদিখানার দোকানে। তাহলে আপনি যদি খুলে ফেলেন এই মুদিখানার দোকান তাহলে কেমন হবে? মাসের শেষে প্রচুর মুনাফা যে পাবেনই তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

তবে এই ব্যবসা শুরুর আগে কয়েকটি বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। সেগুলি হলো:

১) দোকানের স্থান নির্বাচন(Right Place for Shop):
আপনার দোকান এমন জায়গাতে খুলবেন যেটি জনবহুল। বেশি লোকজন আছে এমন জায়গাতে দোকান খুললে দোকানের পরিচিতি এবং ক্রেতা সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।

২) লাইসেন্স(License):
দোকান খোলার আগে অবশ্যই লাইসেন্স সংগ্রহ করুন যাতে পরে কোনোরকম সমস্যায় না পড়তে হয়।

৩) জিনিসের দাম(Price of Products):
যেহেতু আপনার নতুন দোকান, সেহেতু জিনিসের দাম কম রাখুন অন্য দোকানগুলির তুলনায়। ধীরে ধীরে ব্যবসাতে লাভ বাড়লে দাম বৃদ্ধি (Hike the Price) করে অন্য দোকানের সমান দাম রাখবেন।

৪) দোকান সাজানো:
দোকান সাজানোর দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে আপনাকে। মানুষ দৃশ্য নান্দনিক সৌন্দর্য খোঁজে তাই দোকান বেশি সুন্দর ভাবে সাজানো হলে মানুষ আকৃষ্ট হবে বেশি।

কিভাবে সাজাবেন? দোকানের প্রথমভাগে এমন বস্তু রাখুন যেগুলো মানুষের রোজকার দরকার লাগবে যেমন নুন, সাবান, তেল, মশলা এবং পেছন দিকে রাখুন চাল, ডাল সহ ইত্যাদি শস্য সমেত বিভিন্ন জিনিষ।

iv) ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকান(Store of Electronics Goods):
ইলেকট্রনিক্স জিনিস (Electronics Product) অর্থাৎ পাখা, আলো, ফ্রিজ, টিভি ইত্যাদি ছাড়া জীবন বর্তমানে অচল। আর এসব থাকবে কোথায়? ইলেকট্রনিক্স এর দোকানে। অনেক গ্রামেই এখনো অবধি ইলেকট্রনিক্স এর জিনিসের দোকান নেই। অনেক দূরে দূরে গিয়ে কিনতে হয় জিনিস। অর্থাৎ যদি আপনার গ্রামে এই দোকান শুরু করেন তাহলে ব্যবসা চলবে রমরমিয়ে। তবে ব্যবসাটি শুরুর আগে কিছু বিষয় জেনে রাখুন। যেমন:

১) দোকানের স্থান নির্বাচন(Right Place for Shop):
মানুষজন যেখানে বেশি, সেই এলাকায় খুলুন আপনার দোকান। বেশি লোকজন আছে এমন জায়গাতে দোকান খুললে দোকানের পরিচিতি এবং ক্রেতা সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।

২) লাইসেন্স(License):
দোকান খোলার আগে অবশ্যই লাইসেন্স সংগ্রহ করুন যাতে পরে কোনোরকম সমস্যায় না পড়তে হয়।

৩) জিনিসের দাম(Price of Products):
যেহেতু গ্রামে একমাত্র আপনার ইলেকট্রনিক্স এর জিনিসের দোকান, সেহেতু জিনিসের দাম কম রাখুন। বাইরের গ্রামে সস্তায় পেলে মানুষ সেখানেই যাবে। আপনার কাছে আসবেনা তখন তাই দাম কম রাখুন। ধীরে ধীরে ব্যবসাতে লাভ বাড়লে দাম বৃদ্ধি করে অন্য দোকানের সমান দাম রাখবেন।

৪) দোকান সাজানো:
দোকান সাজানোর দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে আপনাকে। মানুষের রোজগার ব্যবহারের জিনিস যেমন পাখা, আলো সামনের দিকে রাখুন দোকানের আর বাকি সব পেছন দিকে। এতে মানুষ আকৃষ্ট (Attract) হয়ে আপনার দোকানে আসবে।

v) সাইবার ক্যাফের দোকান(Cyber Cafe):
বর্তমান সময়ে প্রায় সমস্ত কাজই অনলাইনের (Online) মাধ্যমে হচ্ছে। এমনকি হাতে থাকা Smartphone টি ইন্টারনেট ছাড়া চলেনা এখন। পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ হোক কিংবা হোক কোনো সরকারি প্রকল্পের আবেদন, সবকিছুই এখন অনলাইনের মাধ্যমে হয়।

শহরের মানুষের এইসব জিনিস নিয়ে সমস্যায় পড়তে না হলেও গ্রামের মানুষ সমস্যায় পড়েন গ্রামে কোনো ইন্টারনেটের (Internet) মাধ্যম না থাকায়। অনেকেরই সম্ভব হয়না বাড়িয়ে কম্পিউটার বা স্মার্টফোন (Computer or Smartphone) রাখা। গ্রামেও সাইবার ক্যাফের সুবিধা পাওয়া যায়না তাই বড্ড অসুবিধায় পড়তে হয় মানুষকে।

এসবের সমাধান করতে এগিয়ে আসতে পারেন আপনি অর্থাৎ কম্পিউটার, ইন্টারনেট, প্রিন্টার (Computer, Internet, Printer) এইসব নিয়ে খুলে ফেলতে পারেন সাইবার ক্যাফে(Cyber Cafe)। গ্রামের মানুষের বদ্ধ সুবিধা হবে এতে।

তবে এই ব্যবসা শুরু করতে হলে প্রয়োজন অর্থ বিনিয়োগেরও(Investment)। কতটা পরিমাণে? দেখুন:

বিনিয়োগ(Investment):
এই ব্যবসা শুরু করতে গেলে খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই। মাত্র ২৫- ৩৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই হবে। এর মধ্যেই একটি কমদামী কম্পিউটার, একটি প্রিন্টার হয়ে যাবে যা সাধারণ মানুষের বহু কাজে লাগবে এবং বৃদ্ধি পাবে আপনার ব্যবসা।

vi) নার্সারি প্ল্যান্ট বিজনেস(Nursery Plant Business):
‘একটি গাছ একটি প্রাণ’ আর তাই প্রতিটি মানুষের উচিত গাছ লাগানো। গ্রামে এমনিতে গাছের সংখ্যা বেশি তবে আগে আরো বেশি ছিল। বর্তমানে মানুষ গাছ কেটে চলেছে একের পর এক। শহরে এই পরিমাণ আরো বেশি। প্রকৃতির কথা চিন্তা করে শুরু করতে পারেন নার্সারির ব্যবসা। শুধু গ্রাম নয়, শহরের মধ্যেও এই ব্যবসা ছড়িয়ে দিন আপনি এবং প্রকৃতিকে সুন্দর করে তুলুন।

বর্তমানে আমরা সবাই ভুগছি Global Warming এর কারণে। এই অতিরিক্ত গরম কমাতে বিভিন্ন ফল বা ফুলের গাছ আমরা লাগাতেই পারি এবং সেই ক্ষেত্রে সুযোগ করে দেবে শুধুমাত্র একটি সুন্দর নার্সারি। নার্সারি থেকে আম, জাম, কাঁঠাল বা লিচুর মত বড়ো বড়ো গাছ যেমন থাকবে তেমনই থাকবে লেবু, জবা, টগর ইত্যাদির মত ছোটো ছোটো ফুলের গাছ।

শুধু গ্রাম না, যোগাযোগ মাধ্যমে শহরেও ছড়িয়ে দিন এই ব্যবসা যাতে আমাদের পৃথিবী ফের ঠান্ডা হয় এবং আরাম দান করে।

তবে তার আগে গাছের যত্ন কিভাবে নিতে হয় সেটি শেখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। গাছে সঠিক পরিমাণে সার, জল দেওয়া থেকে শুরু করে পোকার আক্রমণ রোধ করা -এই সবকিছুই শিখতে হবে। এই ব্যবসা শুরু করতে বিনিয়োগের পরিমাণও কম।

বিনিয়োগ(Investment):
এই ব্যবসায় বিনিয়োগ প্রায় নেই বললেই চলে , আপনার কাছে যদি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা সঞ্চয় থাকে তাহলে আপনি খুব সহজে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য রইলো কিছু উপার্জনের শ্রেষ্ঠ উপায়। শুরু করেই দেখুন তারপর দেখুন কেমন লাভবান হবেন।

-Written by Riya Ghosh

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

RELATED ARTICLES

Most Popular