সম্প্রতি বাংলা থেকে ৬ জন যুবক সুযোগ পেয়েছেন ইসরোতে কাজ করার। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO (Indian Space Research Organisation) তে যে ৬ জন যুবক নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে একজন গোবরডাঙ্গার বাসিন্দা সুমন শিকদার।
সুমন শিকদারের বাবার নাম শ্যামল শিকদার, তিনি পেশায় দর্জি। সেলাইয়ের কাজ করেই চলতো সংসার। তবে অভাব অনটনের মধ্যেও তিনি সন্তানদের পড়ালেখার দিকে কখনো কার্পণ্য করেননি। শ্যামল বাবুর রোজগার করোনার সময় প্রায় শূন্যে এসে ঠেকেছিল, তাও তিনি সন্তানদের পড়াশোনায় কোনো রকম আচ আসতে দেননি। সেই পরিশ্রমের ফল অবশ্য পেয়েছেন শ্যামলবাবু এবং তার ছেলের সুমন। বর্তমানে তার ছেলের সুমন ভারতের মহাকাশ গবেষণার সংস্থার চাকরির পরীক্ষাতে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন, এবং হাতে এসেছে নিয়োগ এর চিঠি।
ইসরোর টেকনিক্যাল বিভাগের জন্য মনোনীত হয়েছেন সুমন সিকদার। ২০১৯ সালে তিনি ইসরোর টেকনিক্যাল বিভাগের একটি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে সেখানে ফর্ম ফিলাপ করেন। মাঝে কোনরকম খোজ খবর পাননি করোনার জন্য। অবশেষে সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে নিয়োগপত্র পৌঁছায় তার ঠিকানায়। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ইসরোর চাকরিতে যোগ দেবেন তিনি।শুক্রবার রাতেই গোবরডাঙা থেকে রওনা হয়ে গেছেন তিনি। এবার তার ৬ মাস প্রশিক্ষণ চলবে, তারপর টেকনিক্যাল বিভাগে যোগদান করবেন সুমন।
সংবামাধ্যমের সামনে সুমন বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতেই বেশি আবেদন করেছি, কারণ আমি প্রযুক্তিগত চাকরির পরীক্ষাগুলিই দিতাম। সেই কারণে রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কোনও ভয় লাগেনি।” তিনি আরো বলেন, “বাংলায় মোট ৬ জন এই পদে নির্বাচিত হয়েছেন। অনেকদিন ধরে সরকারি চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলাম, ভাবিনি ইসরো কাজ করার সুযোগ পাব। বাড়িতে বসেই পড়াশুনো করেছি। শেষমেশ নির্বাচিত হয়েছি বলে খুব খুশি।”
ছেলের সাফল্যের আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি সুমনের বাবা শ্যামল শিকদার। তিনি বলেন, “আনন্দে আমার চোখের জল বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি খুব কষ্ট করে ওদের পড়াশুনো শিখিয়েছি। আমি সেলাইয়ের কাজ করি। চাকরি পাওয়ার জন্য ছেলেও খুব কষ্ট করেছে। আমার ছোটো ছেলে উচ্চমাধ্যমিক দেবে। বড় ছেলের সাফল্যে আমরা ভীষণ খুশি হয়েছি।”
সুমনের সাফল্যে উচ্ছসিত তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং গোবরডাঙার সকল অধিবাসী।