একসময় কলকাতা ছিল ভারতের রাজধানী। দেশজুড়ে সুনাম ছিল কলকাতার। আগে বহু বণিক বাণিজ্য করতে কলকাতায় আসতেন এবং কলকাতা বন্দরেরও বেশ নামডাক ছিল। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গঙ্গা নদী। আগে কলকাতায় বহু ব্যবসার সুযোগ ছিল। গঙ্গার ধার দিয়ে থাকত বড় বড় সব কারখানা। তবে এখনো কলকাতায় বেশ কিছু ব্যবসার সুযোগ রয়েছে এবং ইন্টারনেটে যুগে সেই সমস্ত সুযোগ আরও বহু পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে।
অধিকাংশ মানুষের ধারণা যে, ব্যবসা করতে গেলে প্রথমেই অনেক পুঁজি দরকার হয়। তবে উপযুক্ত পরিকল্পনা থাকলেই অল্প পুঁজি, মেধা এবং শ্রম দিয়ে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আজকে আপনাদের জানাবো কলকাতার বাসিন্দাদের ব্যবসা করার জন্য ৬টি বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে। খুব অল্প পরিমাণ মূলধন দিয়েই আপনারা এই ব্যবসাগুলি শুরু করতে পারবেন এবং লাভ হবে নিশ্চিত। (6 Profitable Business Ideas for Kolkata)
ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল:
কলকাতা ৩০০ বছরের প্রাচীন একটি শহর। এখানে যেমন অতীতের ছাপ রয়েছে তেমন রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। দেশের প্রথম মিউজিয়াম, চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, অসংখ্য পার্ক, স্মৃতিসৌধ রয়েছে কলকাতায়। বাইরের রাজ্য থেকে, এমনকি অনেক বাইরের দেশ থেকেও বহু পর্যটক কলকাতায় ঘুরতে আসেন। যারা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কলকাতায় আসেন তারা প্লেনের টিকিট কাটা থেকে শুরু করে হোটেল বুক করা, ঘোরা সবকিছুর জন্য ট্রাভেল এজেন্ট ভাড়া করে থাকেন। তাই ট্রাভেল এজেন্ট এর ব্যবসা করে আপনারা প্রত্যেক মাসে বিপুল পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
চায়ের বিজনেস:
কলকাতার জনসংখ্যা বেড়েছে। প্রত্যেকেরই সকালে চায়ের দরকার হয়। অফিস যাওয়া যাত্রী এবং অফিস ফেরত যাত্রীদের এনার্জি বুস্টার হিসেবে কাজ করে চা এর মত ড্রিংক গুলি। এজন্য কলকাতা শহর জুড়ে চায়ের দোকানগুলিতে চোখে পড়ার মতো ভিড় লক্ষ্য করা যায়। শহরের ব্যস্ততম জায়গা গুলিতে চায়ের দোকানের মাধ্যমে প্রত্যেক দিন কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যায়। এছাড়া গঙ্গার পাড়, স্টেশনের লাগোয়া রাস্তা এমন সব জায়গায় চায়ের দোকান দিলে প্রত্যেকদিন কয়েকশো মানুষ চায়ের দোকানে আসবে। তার সাথে যদি চা পাতার ব্যবসা শুরু করা যায় তাহলে আরো বহু সংখ্যক দোকানদার চা পাতা কিনতেও ভিড় জমাবে।
ব্রাইডাল শোরুম:
আমাদের দেশে বিয়ে অনুষ্ঠানটি জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ে মানেই জমকালো পোশাক এবং সাজগোজ। তাই trending হিসাবে কোন কোন পোশাক সেরা হতে পারে , সেইগুলি শোরুমে রেখে ব্রাইডাল শোরুম বিজনেস খুব সহজে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
ইলেকট্রিক ডিভাইস এর বিজনেস:
কলকাতার বিভিন্ন অলিতে গলিতে,স্টেশন এর পাশে এবং স্টেশন লাগোয়া রাস্তাগুলোর পাশে অনেক ইলেকট্রিক ডিভাইসের খুচরো দোকান দেখতে পাওয়া যায়। ইয়ারফোন ,হেডফোন, মোবাইলের স্ট্যান্ড, কভার ইত্যাদি অনেক জিনিস এই দোকানগুলিতে বিক্রি করা হয়। এই খুচরো দোকানগুলি ইলেকট্রিক ডিভাইসগুলি সরবরাহের জন্য বড় কোনো পাইকারি বা হোলসেলার এর ওপর নির্ভর করেন। এজন্য যদি ইলেকট্রিক ডিভাইসের পাইকারি বা হোলসেলার হিসেবে ব্যবসা শুরু করতে পারেন তবে সে ক্ষেত্রেও অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন আপনি।
মিউজিক সেন্টার:
কলকাতার মানুষ সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক। কলকাতা থেকে বহু কিংবদন্তি সংগীত শিল্পীরা সারা ভারতের ছড়িয়ে পড়েছেন। মান্না দে, কিশোর কুমার থেকে শুরু করে বিভিন্ন বড় বড় ব্যান্ড এর নাম রয়েছে সারা ভারত জুড়ে। এছাড়া বহু অভিভাবকেরা চান তাদের সন্তানকে ছোট থেকে গান বা বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখাতে। তাই একটি মিউজিক সেন্টার খুলে যদি ভালো শিক্ষক নিয়োগ করতে পারেন সেখান থেকেও আপনার প্রচুর টাকা উপার্জন হবে প্রত্যেক মাসে। শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রি করার মাধ্যমেও আপনার অনেক টাকা লাভ হবে প্রত্যেক মাসে।
মিষ্টির দোকান:
রসগোল্লার মত মিষ্টি জন্ম দিয়েছেন বাঙালির নবীনচন্দ্র দাস। বাইরে রাজ্যে বাঙালির কথা বললে প্রথমেই মাথায় আসে রসগোল্লার কথা। শুধু কলকাতা কেন, সারা বাংলা জুড়েই মানুষ মিষ্টির প্রতি আকৃষ্ট। মিষ্টির দোকান খুলে অনেক টাকা উপার্জন করার সুযোগ হয়েছে কলকাতায়। তবে দেখতে হবে মিষ্টির কোয়ালিটি যেন খুব ভালো হয়। মিষ্টির কোয়ালিটি,স্বাদ যদি খুব ভালো হয় তবে ক্রেতারা দাম নিয়ে অতটা ভাববে না। তবে দামটাও ক্রেতাদের মনমতো হলে বিক্রিও বাড়বে।