HomeMoneyছাত্রছাত্রীদের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার সহজ ৮টি উপায়

ছাত্রছাত্রীদের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার সহজ ৮টি উপায়

বয়সের গণ্ডি মোটামুটি ২০ বছর পার হবার পরেই ছেলেমেয়েদের মাথায় পরিবারের চিন্তা চলে আসে। অনেক প্রতিকূল পরিবারে ছেলেমেয়েরা খুব অল্প বয়স থেকে বিভিন্ন কাজের মধ্যে ঢুকে যায় পড়াশোনার পাশাপাশি। পরিবারের অবস্থা সচ্ছল হলেও বাবা মায়ের কাছ থেকে টাকা নেবার থেকে যদি নিজে উপার্জন করা যায় সে ক্ষেত্রে সামান্য উপার্জন (Earning) এর জন্যও একটা আলাদা সম্মান অনুভব করা যায়।

মোটামুটি ছাত্রাবস্থায় প্রতিটা ছেলেমেয়েই চায় আত্মনির্ভর হতে। নিজের হাত খরচার কিছু টাকা, মোবাইল রিচার্জের টাকা, পরিবারের কাউকে উপহার দেওয়া এগুলো নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে করতেই একটা আলাদা শান্তি আসে। অনেক ছেলে মেয়েরাই পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন রকম পার্টটাইম কাজ (Part time Job) করে থাকেন। এতে করে তাদের পরিবারের উপর নির্ভরশীলতা ও কমে একটা আত্মনির্ভরতা ও তৈরি হয়। পাশাপাশি বন্ধুদের সাথে হোক বা একা, জীবনটা ভালোভাবেই উপভোগ করা যায়।

আজকাল চাকরি-ক্ষেত্রের (Job field) অবস্থা খুবই খারাপ। অনেক চাকরিতে ব্যক্তির পূর্ব অভিজ্ঞতাকে (Experience) গুরুত্ব দেওয়া হয়। স্কুলে কলেজে পড়াশোনা করাকালীন ফাঁকা সময় আড্ডা দিয়ে সময় না কাটিয়ে পার্ট টাইম কাজ করতে পারেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এছাড়াও চাকরি ক্ষেত্রে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের আংশিক কাজের অভিজ্ঞতা আছে তাদেরকে নিয়োগের সময় যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। পার্ট টাইম জব গুলি করার সময় ছাত্রছাত্রীরা যে সমস্ত অভিজ্ঞতা উপার্জন করেন সেগুলোর ভিত্তিতেই তাদের নিয়োগ (Recruit) হয়ে থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।

স্কুল কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন রকম পার্টটাইমের কাজ করতে পারেন। সেগুলির ব্যাপারেই আজকে জানাবো।

কনটেন্ট রাইটিং:

যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো লেখার হাত আছে, তারা এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নানা রকম কন্টেন্ট লিখতে পারেন (Content writing job)। বিভিন্ন কোম্পানিগুলি তাদের ওয়েবসাইট, ব্লগ এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজে এমন কনটেন্ট রাইটারদের Hire করে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কুল কলেজে পড়া শিক্ষার্থীদের নিয়োগ করা হয়। দিনের সামান্য একটু সময় লেখালেখি করেই মাসে ৫০০০ থেকে ৮০০০ টাকা উপার্জন করা যায় এভাবে। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীদের কাছেও এটি একটি জনপ্রিয় কাজ। পড়াশোনার পাশাপাশি স্বাচ্ছন্দেই এই কাজটি করা যায়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের লেখা দক্ষতা ও বাড়তে থাকে।

দক্ষতা কাজে লাগানো:

ধরুন আপনি ভালো গিটার বাজাতে পারেন বন্ধু মহলে। বা ভালো ছবিও আঁকতে পারেন। সেক্ষেত্রে গিটারের কোচিং বা ড্রইংয়ের কোচিং খুলেও আপনি উপার্জন করতে পারবেন।

টিউশন পড়ানো:

ছাত্রাবস্থায় পড়াশোনার পাশাপাশি সবথেকে ভালো ও সম্মানজনক পেশা হলো টিউশন (Tution) করা। আপনি আপনার পড়ার সাধ্যের মধ্যে থাকা ক্লাসের স্টুডেন্টদের পড়িয়ে উপার্জন করতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করলে ভবিষ্যতে আরও ছাত্র বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। এভাবে বেশ ভালো উপার্জন হতে পারে।

ইউটিউবিং:

বর্তমানে সারা পৃথিবীর যুবক যুবতীরা ইউটিউবে (YouTube) আগ্রহী হয়েছেন। ইউটিউবে নিজস্ব চ্যানেল খুলে সেখানে নিয়মিত কনটেন্ট (Video content) দিয়ে ভালো উপার্জন করা যায়। চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার, কনটেন্ট এবং ভিউ ভালো থাকলে একজন সরকারি কর্মচারীর থেকেও অনেক বেশি উপার্জন করা যায় প্রতি মাসে। তবে ইউটিউব থেকে রোজগার করা বেশ ধৈর্যের কাজ। একদিনে বা এক মাসের মধ্যে তা সম্ভব হয় না। অনেকেই ধৈর্য হারিয়ে হাল ছেড়ে দেন। কিন্তু যারা ধৈর্য ধরে আজ অনেক উপরে পৌঁছে গিয়েছে তাদের কেউ কেউ মাসে কয়েক লক্ষেরও বেশি উপার্জন করে থাকেন।

ফটোগ্রাফি:

আপনার যদি ছবি তোলার শখ থাকে এবং ছবির গুণগত মান ভালো হয় সেক্ষেত্রে আপনি বেশ মোটা অংকের রোজগার করতে পারেন। অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করা যায়। অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে এমন সুবিধা পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটগুলোতে আপনি আপনার তোলা ছবির সত্ব (Copyright) বিক্রি করে উপার্জন করতে পারবেন।

গ্রাফিক্স ডিজাইন:

ছাত্রাবাস্থায় গ্রাফিক্সের (Grafics) কাজ শিখে বিভিন্ন কোম্পানি এবং ডিজাইনারের কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমানে গ্রাফিক্সের চাহিদা বেশ ভালোই। ডিজিটাল(Digital) যুগে গ্রাফিক্সের এই কাজের জন্য ছাত্রছাত্রীরা সুযোগ পান। চাহিদা বেশ ব্যাপক হবার কারণে ইনকাম নিয়েও কোনো সমস্যা হবে না।

রিসেপশনিস্ট ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর:

বিভিন্ন কোম্পানির ফ্রন্ট ডেস্কে রিসেপশনিস্ট(Receptionist) এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের(Data entry operator) প্রয়োজন হয়। কোম্পানিগুলি তাদের বিভিন্ন ব্রাঞ্চে সমস্ত ডাটা সামলানোর জন্য কোন নির্ভরযোগ্য কর্মীর সন্ধানে থাকে। নানা ধরনের ডাটা গুলি সংগ্রহ করে কম্পিউটারের সাজিয়ে ফেলতে পারলেই হাতে আসতে পারে মোটা অংকের টাকা। আবার বিভিন্ন কোম্পানির শোরুম, হোটেল, বা বড় ব্রাঞ্চে ফ্রন্ট ডেস্ক এ রিসেপশনিস্টের খোঁজ করেন। অতিথি সামলানো, তাদের যাওয়া আসার সময় এর হিসাব রাখা ইত্যাদি কাজও একজন রিসেপশনিস্ট হিসেবে করা যেতে পারে।

কল সেন্টার কর্মী:

বিভিন্ন কোম্পানির কল সেন্টারে অনেক কর্মীর প্রয়োজন হয়। কোম্পানির গ্রাহকদের পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ শুনে সেগুলোর সমাধান করায় এই পেশার কাজ। এছাড়া কোম্পানির বিভিন্ন পরিষেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের জানানো, তাদেরকে ম্যানেজ করা ইত্যাদি কাজও করতে হয় এখানে। পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা স্বাচ্ছন্দেই এই কাজ করতে পারেন। আত্মনির্ভর হবার মত বেশ ভালো মাইনেও পাওয়া যায় এই কাজে।

পড়াশোনার পাশাপাশি আয়ের এমন অনেক উৎস আছে। তার জন্য আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং ধৈর্যশীল হতে হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি এই কাজগুলো করার ফলে আপনাদের নতুন কিছু শেখার ও জানার সুযোগ হবে। দক্ষতা ও বাড়বে। তাই কলেজ ও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উচিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে কোন না কোন পার্টটাইম কাজে যুক্ত হওয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা করলে যেমন আর্থিক সমস্যার সমাধান হবে, ঠিক তেমনই পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করলে আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি পাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

RELATED ARTICLES

Most Popular