ছাত্র-ছাত্রীদের বয়স মূলত 13-14 বছর হবার পর থেকে তাদের অন্যান্য অনেক খরচ যুক্ত হয়। পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি যাতায়াত খরচ, টিফিন কেনার খরচ, মোবাইল রিচার্জ এবং আরও অনেক খরচ তখন অতিরিক্ত করতে হয়। স্কুল জীবন পার হয়ে কলেজ জীবনে প্রবেশ করার সাথে সাথে খরচের পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে। কলেজে ভর্তির খরচ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বই খাতা, টিউশন খরচ, যাতায়াত খরচ যুক্ত হয় তাদের খরচের সাথে।
অনেক ছেলেমেয়েরা আছে, যারা ছাত্র জীবন থেকেই ছোটখাটো খরচের জন্য পরিবারের উপর নির্ভরশীল থাকতে চায় না। তাই জন্য তারা চান বিকল্প কোন আয়ের উৎস খুঁজতে। অনেক ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়ার পাশাপাশি এবং কলেজে পড়ার পাশাপাশি কোন না কোন ভাবে উপার্জন করে থাকেন। এই উপার্জনের টাকা দিয়ে তারা তাদের পড়াশোনার খরচ চালান এবং অন্যান্য কাজে খরচ করে থাকেন।
এই প্রতিবেদনে থাকছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৮টি ইনকাম করারা পদ্ধতি, যা থেকে হাজার হাজার টাকা ইনকাম সম্ভব। স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়া, সকলেই এই কাজগুলি করতে পারবেন। এই কাজগুলিতে বিশেষ কোন পরিশ্রম নেই বললেই চলে, তবে মাস গেলে অনেক টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
খাবার ডেলিভারি করা:
বর্তমানে মানুষের বাড়িতে খাবার তৈরি করার সময় এর অভাব। তাই অনেকেই অনলাইনে ফুড ডেলিভারি অ্যাপ এর ওপর নির্ভরশীল। Zomato, Swiggy থেকে শুরু করে বর্তমানে বহু অ্যাপ খাবার ডেলিভার করে। এই সংস্থাগুলির ফুড ডেলিভারি(Delivery) পার্সন হিসাবে কাজ করে আপনারা প্রতিমাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এই সংস্থাগুলিতে প্রচুর ডেলিভারি(Delivery) বয় এবং ডেলিভারি গার্ল এর দরকার হয়।
প্রত্যেক মাসে আপনারা ২০ হাজার টাকা বা তার বেশি উপার্জন করতে পারবেন। এখানে আপনি কলেজে পড়তে পড়তেও পার্টটাইম হিসাবে কাজ করতে পারেন। তাছাড়া সারাদিন পড়াশোনা করার পর রাতে নাইট শিফটেও কাজ করতে পারেন।
প্রোডাক্ট রিসেলিং:
এখনকার দিনে অন্যতম একটি স্মার্ট বিজনেস হলো রিসেলিং বিজনেস(Reselling Business)। Mesho বা Shopsy এর মত প্ল্যাটফর্ম গুলি থেকে আপনারা এই কাজটি খুব সহজেই করতে পারবেন।
প্রথমে আপনাকে নির্দিষ্ট একটি পণ্যের ছবি এবং তার শর্ট ডিটেলস আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টগুলিতে পোস্ট করতে হবে। কেউ যদি আপনার কাছ থেকে এই জিনিসটি কিনতে চায়, তাহলে আপনি এই ওয়েবসাইট গুলির মাধ্যমে তার ঠিকানায় অর্ডার করে দিতে পারেন নিজের একটি লাভ রেখে।
ধরুন, একটি জিনিসের দাম ৫০০০ টাকা। সেটি আপনি রিসেলিংয়ের মাধ্যমে কাউকে ৫৫০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। কোম্পানি জিনিসটি সেই ব্যক্তির ঠিকানাতে ডেলিভার করবে এবং সেই ব্যক্তির থেকে ৫৫০০ টাকাই নেবে। সেখান থেকে আপনার লাভের ৫০০ টাকা আপনার একাউন্টে চলে আসবে।
ইউটিউব চ্যানেল:
স্কুল কলেজে পড়াকালীন আপনারা অবসর সময়ে ইউটিউব ভিডিও(YouTube Video) তৈরি করতে পারেন। বর্তমানে অনেক ছেলেমেয়েরা এবং বড়রাও ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে প্রত্যেক মাসে কয়েক হাজার টাকা থেকে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে থাকেন।
আপনারা যে বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়টি সম্পর্কে ভালো কনটেন্ট সমৃদ্ধ ভিডিও তৈরি করতে হবে এবং সেই ভিডিও ইউটিউবে(YouTube) পোস্ট করতে হবে। নির্দিষ্ট সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার(YouTube Subscriber) এবং ভিডিওতে ভিউয়ের সংখ্যা অনুযায়ী ইউটিউব কোম্পানির পক্ষ থেকে টাকা পেমেন্ট করা হয়। আপনাদের ভিডিও যদি বহু সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছায়, তাহলে আপনিও প্রত্যেক মাসে ইউটিউব থেকে মোটা অংকের টাকা পেতে পারেন। এমনকি ইউটিউব থেকে পাওয়া অর্থের পরিমাণ চাকরি থেকে পাওয়া অর্থের পরিমাণের থেকে অনেকটা বেশি বা কয়েক গুণ পর্যন্ত হতে পারে।
কন্টেন্ট রাইটার:
একজন কন্টেন্ট রাইটার(Content Writer) হিসেবে কাজ করে আপনি প্রতিমাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এই কাজে আপনার খুব বেশি একটা সময় খরচ হবে না। দিনের অবসর সময় আপনি লেখালেখি করার মাধ্যমে প্রত্যেক মাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। বিভিন্ন রকম সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) প্লাটফর্মে বা কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইটে লেখালেখির মাধ্যমে অনেক টাকা উপার্জন(Earning) করা যায়।
পাশাপাশি কোন একটি বিষয় নিয়ে রিসার্চ করে লেখার পর সেই লেখাটি আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রিও করতে পারবেন। এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে ইন্টারনেটে(Internet)। তবে অবশ্যই আপনাকে সেই ওয়েবসাইটগুলি ভেরিফাই করে তারপরেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
অনলাইন কোচিং:
পড়াশোনা সম্পর্কিত বা অন্য কোনো বিষয়ে আপনার ভালো জ্ঞান থাকলে সেটি অন্যদের শেখাবার মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
বর্তমানে শিক্ষা, ব্যবসা সহ একাধিক বিষয় অনলাইন(Online) নির্ভর হয়ে পড়েছে। অনলাইনেই আপনারা কোচিং করাতে পারবেন। কলেজ থেকে ফিরে বা অবসরে স্বাচ্ছন্দের সাথেই অনলাইনে কোচিং করাতে পারবেন
আপনারা যে যে বিষয়ে দক্ষ, সেই বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে পড়ানো শুরু করতে পারবেন । এই ব্যবসাতে আপনার মূলধন হিসেবে তেমন কিছুই লাগবে না। একটি ভাল এন্ড্রয়েড ডিভাইস বা কম্পিউটার ডিভাইস এবং ইন্টারনেট(Internet) হলেই আপনি এগিয়ে যেতে পারবেন।
ডাটা এন্ট্রি জব:
ডাটা এন্ট্রি কাজের মাধ্যমে আপনারা মাসে মোটা উপার্জন করতে পারেন। কিছু বেসরকারী সংস্থা, লোকাল শোরুম বা মার্কেটে ডাটা এন্ট্রি পদের জন্য তারা কর্মী খুঁজে থাকেন। আপনারা সেখানে অংশগ্রহণ করে একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর(Data Entry Operator Job) হিসেবে কাজ করে উপার্জন করতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখবেন বর্তমানে প্রচুর ডাটা এন্ট্রি জব দেওয়া নামে প্রতারণা হয়ে থাকে। সুতরাং ভালোভাবে বুঝে তারপর এই কাজ শুরু করবেন, সে যে কম্পানিতেই করুন না কেন।
ইন্টারনেটে সার্চ করে বিভিন্ন ডাটা এন্ট্রির কাজ খুঁজতে পারেন, তবে অবশ্যই সেগুলি একবার ভেরিফাই করে নেবেন।
ড্রয়িং স্কুল:
আজকালকার অভিভাবকেরা চান তাদের সন্তানেরা পড়াশোনার পাশাপাশি অন্য কোন বিষয়ে দক্ষ হোক। এইজন্য অনেকেই তাদের সন্তানদের বিভিন্ন ড্রইং স্কুলে(Drawing School) ভর্তি করিয়ে দেন। আপনার যদি আঁকার দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে আপনি আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে একটি ভালো ড্রয়িং স্কুল খুলতে পারেন. ছাত্র-ছাত্রীরা আপনার কাছ থেকে আঁকা শিখে ভবিষ্যতে বিভিন্ন কাজে সেটি প্রয়োগ করতে পারবে।
সপ্তাহের একটি বা একাধিক দিনে আপনি আপনার ড্রয়িং স্কুল চালু রাখতে পারবেন। এই কাজটি করে আপনারা প্রত্যেক মাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন তো বটেই, তার সাথে সারা সপ্তাহ জুড়েই ফাঁকা সময় থাকবে। এই ফাঁকা সময়টিকে আপনারা বিভিন্নভাবে কাজে লাগাতে পারবেন।
Fulfillment By Amazon:
টাকা উপার্জন করার জন্য এটি একটি ছোট আকারের ব্যবসায়িক আইডিয়া। এটি কিভাবে করতে হবে তা সম্পূর্ণ বিস্তারিত জেনে নিন
ধরুন এক ব্যক্তি কোন একটি সামগ্রী বিক্রি করতে চাইছেন। আপনাকে প্রথমে সেই সামগ্রীটি কিনতে হবে। তারপর সেই সামগ্রীটি পাঠিয়ে দিতে হবে আমাজনের ওয়ার হাউসে। আমাজনের পক্ষ থেকে ওই সামগ্রীটির মান পরীক্ষা করা হবে এবং মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সামগ্রীটি আমাজনের তরফ থেকে অনলাইনে আপলোড করা হবে।
গ্রাহকরা যদি ওই ব্যক্তির সামগ্রী অর্ডার করেন, তাহলে আমাজন নিজেই প্যাকেজিং থেকে শুরু করে ডেলিভারি সবই করবে। Amazon FBA বা Fulfillment By Amazon অর্থ উপার্জন এর জন্য অন্যতম একটি রাস্তা হতে পারে।